ঢাকা | বঙ্গাব্দ

দম্পতির জন্য এক যন্ত্রণাময় বাস্তবতা বারবার গর্ভপাত: কারণ, পরীক্ষা ও চিকিৎসা

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : Jul 16, 2025 ইং
দম্পতির জন্য এক যন্ত্রণাময় বাস্তবতা বারবার গর্ভপাত: কারণ, পরীক্ষা ও চিকিৎসা ছবির ক্যাপশন: দম্পতির জন্য এক যন্ত্রণাময় বাস্তবতা বারবার গর্ভপাত: কারণ, পরীক্ষা ও চিকিৎসা
ad728

একাধিকবার গর্ভপাত বা Recurrent Pregnancy Loss (RPL) এমন একটি অবস্থা, যা দম্পতির জন্য এক চরম মানসিক ও শারীরিক যন্ত্রণা হয়ে দেখা দেয়। সাধারণত ২৪ সপ্তাহের আগেই পরপর দুই বা তার বেশি বার গর্ভপাত হলে সেটিকে বারবার গর্ভপাত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং আমেরিকান কলেজ অব অবস্টেট্রিশিয়ানস অ্যান্ড গাইনোকোলজিস্টস (ACOG) এর মতে, প্রতি ১০ জন নারীর মধ্যে প্রায় একজন কখনো না কখনো বারবার গর্ভপাতের শিকার হন। এ ধরনের পরিস্থিতি শুধু গর্ভধারণের পথে বাধা নয়, বরং একটি পরিবারের স্বপ্নভঙ্গের নাম। তবে আধুনিক চিকিৎসা ও নির্ভুল কারণ শনাক্তকরণে এখন অনেকাংশেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব।

 

বারবার গর্ভপাতের প্রধান কারণসমূহ:
 

১. জেনেটিক সমস্যা
সবচেয়ে বেশি গর্ভপাতের পেছনে দায়ী হলো জেনেটিক বা বংশগত অস্বাভাবিকতা। পিতা-মাতার এক বা উভয়ের ক্রোমোজোমে সমস্যার কারণে ভ্রূণের জিনগত গঠন বিকৃত হয়, যার ফলে গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসেই গর্ভপাত ঘটে।

গবেষণায় দেখা গেছে, প্রথম ত্রৈমাসিক গর্ভপাতের প্রায় ৫০% এর পেছনে জেনেটিক কারণই দায়ী।

 

২. রক্ত জমাট বাঁধা (Antiphospholipid Syndrome - APS)
এটি একটি অটোইমিউন রোগ যেখানে শরীর নিজেই এমন অ্যান্টিবডি তৈরি করে যা রক্তকণিকার উপর আক্রমণ করে, ফলে প্ল্যাসেন্টায় রক্ত চলাচল ব্যাহত হয় এবং ভ্রূণ পর্যাপ্ত পুষ্টি পায় না—ফলে গর্ভপাত ঘটে।

 

 

৪. হরমোনজনিত সমস্যা
হাইপোথাইরয়েডিজম (থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি)

অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস

পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম (PCOS)

উচ্চ প্রোল্যাক্টিন হরমোন

 

৫. বয়স ও জীবনধারা
৩৫ বছরের বেশি বয়সী নারীদের মধ্যে গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ে।

ধূমপান, অতিরিক্ত ক্যাফিন, অ্যালকোহল সেবন, স্থূলতা এসবই গর্ভপাতের সম্ভাবনা বাড়ায়।

 


 

চিকিৎসা নির্ভর করে কারণের উপর:
রক্ত পাতলা করার ওষুধ: APS থাকলে ডাক্তারি পরামর্শে হেপারিন বা অ্যাসপিরিন ব্যবহার করা হয়।
প্রোজেস্টেরন থেরাপি: কিছু ক্ষেত্রে ভ্রূণের স্থায়িত্ব বাড়াতে ব্যবহৃত হয়।
IVF ও PGT: জেনেটিক সমস্যা থাকলে প্রি-ইমপ্লান্টেশন জেনেটিক টেস্টিংসহ আইভিএফ করা হয়।
সার্জারি: জরায়ুর বিকৃতি থাকলে প্রয়োজন অনুযায়ী অস্ত্রোপচার।
হরমোন নিয়ন্ত্রণ: থাইরয়েড ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ওষুধ ব্যবহৃত হয়।

 


 


নিউজটি পোস্ট করেছেন : মাহাদী হাসান

কমেন্ট বক্স